❤️🩹 সামীর সাথে নিজ বান্ধবীর পরিচয় করালে যা হয়।
❤️🩹 সামীর সাথে নিজ বান্ধবীর পরিচয় করালে যা হয়।
সদ্য বিয়ের পর আমার এক বান্ধবী খুব জোর করেছিল আমি যেন ওর স্বামীর সাথে ফোনে কথা বলি। ওর স্বামী চায় আমাদের সব বান্ধবীদের সাথে পরিচিত হতে। কিন্তু, আমি তাকে বারণ করে বলেছিলাম, এটা ঠিক হবে না। এমনটা করা উচিতও না। সে তখন যাচ্ছেতাই বলে বলেছিল আমি একটু বেশীই ভাবছি। ভবিষ্যতে যখন আমার বিয়ে হবে, তখন সে-ও আমার স্বামীর সাথে কথা বলবে না। আমি তখন বললাম, আমার স্বামীকে তো তোদের সাথে পরিচয় করিয়ে-ই দিব না। এখন সে-ও যদি বলে, লাভ নেই।
এ নিয়ে ঝামেলার পর ও আমার সাথে পুরোপুরি যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর অন্য একজনকে কথা বলায়। একটা সময় পর বান্ধবীর স্বামী হঠাৎ করেই তাকে তার বান্ধবীর সাথে তুলনা দিতে থাকে। শুরু হয় তাদের মনোমালিন্য। প্রতিটি ক্ষেত্রে বলত, " তুমি এমন কেন? অথচ তোমার বান্ধবী কতো বুঝে। " হেন-তেন ঝগড়ায় তাদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। ও তখন তাদের কথা বলাটা বন্ধ করতে চেয়েছিল। পারে নি।
আমার আরো দু'টি বান্ধবীরও সেইম কাহিনী। বিয়ের পর একজন ফেসবুক ইউজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। আর তার স্বামীর আইডিতে এড করেছে সমস্ত ফ্রেন্ডদের। সেখান থেকে অন্য একজন তার স্বামীর সাথে কথা বলা শুরু করে। অথচ, এর আগে সে নিজের স্বামীর সর্বোচ্চ প্রশংসা করে ভাসিয়ে দিয়েছে বান্ধবী মহলে।
আরেকজনের তো ডিভোর্স পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। পরে পারিবারিকভাবে সমাধান হয়। সম্পর্কে একজন আন্টি, যার সাথে আমার খুব খাতির ছিল। উনিও আমাকে বেশ পছন্দ করতেন। এবং আমার প্রত্যেকটা বিষয়ে অতিরিক্ত প্রশংসা করতেন সবার সামনে। উনার স্বামীর সাথেও আমার গল্প করেছিলেন। একদিন তিনি জানান, উনার স্বামীর সাথে যেন আমি কথা বলি৷ শুধু একবার হলেও। উনার স্বামীর না-কি এমনিই পরিচিত হতে ইচ্ছে করছে।
আমি কথা বলতে অস্বীকার করলাম। কিন্তু, হঠাৎ করে অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে What's app এ মেসেজ আসে। পরিচয় শুনে বুঝলাম তিনি ওই আন্টির স্বামী। বিষয়টি আমার জন্য বিব্রতকর ছিল। অনুমতি ব্যতিত নাম্বার প্রদানে খারাপ লাগছিল। আবার যেহেতু এখন উত্তর দিয়ে ফেলেছি, তাই আবার এড়িয়ে চলাটাও কেমন জানি লাগছে।
শুধু ফর্মালিটির জন্য উত্তর দিলাম। এরপরে শুরু হয় উল্টাপাল্টা কথা। উনি আমাকে পছন্দ করেন, কীভাবে জানি এতো প্রশংসা শুনতে শুনতে ভালো লেগেছে, হেনতেন আজাইরা কথা। পরে আমি কঠোর কথা বলে এবং হুমকি দিয়ে ব্লক করে দিলাম। ওই আন্টিকে কিছু জানাতে খারাপ লাগছিল। তাদের খুব চমৎকার একটি সংসার আছে৷ তাই ওখানে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে ভেবে আর বলি নি।
পৃথিবীতে মানুষের মন একমাত্র জিনিস, যা নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন। এটা সবাই পারে না। মনে কখন কী হয়? কোনদিকে যায়? এটা মানুষ নিজেও টের পায় না। যারা নিজের শখ-স্বপ্ন চাপা দিয়ে নৈতিকতা ধরে রাখে, তারাই কেবল নিজেদের মন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তখন অন্যদের সাথে নিজের পার্টনারকে তুলনা দিতে পারে না। এটা করেও না। তারা সব মানিয়ে নেয়। এটাও বুঝে সবাই সবটুকু পায় না। মেনে নেওয়া, মানিয়ে নেওয়া মানুষগুলো কখনো অন্যদের প্রশংসায় মুগ্ধ বা আকৃষ্ট হয় না। পার্টনার যেমন আছে, তেমনিই পারফ্যাক্ট। আর কিচ্ছু চায় না।
যে কোনো সম্পর্কে দৃঢ়তার ক্ষেত্রে নিয়মিত কথাবার্তা, যোগাযোগের প্রয়োজন। কেউ যদি দীর্ঘদিন কারো সাথে আলাপ করে, তাহলে এমনিও মনে একটি টান তৈরী হয়৷ তাছাড়া প্রশংসার প্রতি মোটামুটি সবাই দূর্বল। আর তুলনা জিনিসটা এর সুযোগ নিয়ে থাকে।
আপনি আপনার পার্টনারকে দশজনের মধ্যে ছেড়ে দিবেন, আর আশা করবেন সে খুব লয়্যাল থাকবে, এই ধারণাটাই ভুল। আবার আপনি আপনার পার্টনারের সামনে অন্য একজনের আলোচনা, প্রশংসা করবেন, আর সে মুগ্ধ হবে না। এটাও ভুল। কুমিরের থেকে পালানোর জন্য মানুষ দৌড় দেয়। কাছে গিয়ে তামাশা দেখিয়ে বলে না, " আয় আয়! কামড় দে তো দেখি! "
সবাই নিজেকে শক্ত রাখতে পারে না। সবাই বিশস্ত থাকতে পারে না। দিনশেষে সবাই মানুষ। আর মানুষের মন নিয়ন্ত্রণের বাহিরে।
বাংলাদেশি যুবক ও এক রোহিঙ্গা তরুনীকে নিয়ে লেখা "আমিরুল মোমেনিন মানিক" দারুন এক উপন্যাস লিখেছে পড়ে দেখুন ভালো লাগবেই। ৪ টি ছোট ছোট পর্বে সমাপ্ত হয়েছে।
▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-২
▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-৩
▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-৪
🌹 ধন্যবাদ 🌹
এ জন্যই পার্টনারের প্রতি লয়্যাল থাকার আগে নিজের প্রতি লয়্যাল থাকতে হবে। অর্থাৎ, "আমার কেউ নেই, তাই এখন যা খুশী করতে পারি" আবার "আমার পার্টনার আছে, তাই তার প্রতি লয়্যাল আছি" এই দু'টি ভাবনার থেকে আপনার নিজেকে নৈতিকতা ধরে রাখতে হবে। যেন আয়নার সামনে দাঁড়ালে নিজেকে অপরাধী মনে না হয়। অন্যের কাছে পরিশুদ্ধ হওয়ার আগে আত্মশুদ্ধির প্রয়োজন। দিনশেষে যেন চিৎকার করে বলতে পারেন, আমি আমার কাছেও বিশস্ত। জেনে-বুঝে কিংবা ভুলে কোনো অন্যায় করি নি।
No comments