Header Ads

▶️ রোহিঙ্গা এক লারকি। পর্ব-২

 

 আগের পর্ব। ▶️ রোহিঙ্গা এক লারকি। পর্ব- ১

ফাতেমা মংডু: বিপ্লবের প্রতিচ্ছবি

ডেটলাইন ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০৩৪। মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যায় এক ঘৃণিত বর্বরোচিত ঘটনা। টিয়ার্স অব পিপল (টপ) নামে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন রাখাইনের নাগরিকদের সুরক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করে। শান্তিপূর্ণ এ কর্মসূচিতে হামলা চালায় পুলিশ। প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়, আহত হয় আরো অনেকে। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী এখন নিন্দার টাইফুন চলছে।

জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া হলে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। যদিও এখনো এক সপ্তাহ পেরোয়নি। প্রথমবারের মতো এই ইস্যুতে চীন ও ভারত কড়া নিন্দা জানিয়েছে। তুরস্ক আরো একধাপ এগিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের হুমকি দিয়েছে। সুতরাং বলা যায়, স্মরণকালের ভয়াবহ চাপের মধ্যে রয়েছে সেনাবাহিনী সমর্থিত মিয়ানমার সরকার।

এদিকে, রাখাইনের অধিবাসীদের অধিকার আদায়ের সংগঠন ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টও তীব্র নিন্দা জানিয়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমার আর্মি কর্তৃক রাখাইনে স্মরণকালের ভয়াবহ অভিযানের পরই মূলত এই সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়। ৭ বছর এই সংগঠন গোপনে কাজ করেছে। সবচেয়ে বড় সুখবর হলো, সংগঠনটি ইতোমধ্যে সর্বজনীনতা অর্জন করেছে। এটি রোহিঙ্গাদের আন্দোলনের প্লাটফর্ম হলেও এখানে মিয়ানমারের গণতন্ত্রমনা হাজার হাজার মানুষ সম্পৃক্ত। এমনকি এই সংগঠনে সামরিক বাহিনীর সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তাও রয়েছেন। তারা মানবাধিকার সুরক্ষার ইস্যুতে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।

ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের সব সফলতার একটাই উৎস, ফাতেমা মংডু। ফাতেমা মংডু সম্পর্কে গত ১০ বছরে নানা তথ্যই শোনা গেছে মিডিয়া মারফত। কিন্তু গ্রহণযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায় না। তবে এটুকু জানা যায়, ২০২৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠা করেন রাখাইনের মংডু অঞ্চলের ফাতেমা মংডু। তার অসাধারণ নেতৃত্ব, কর্মদক্ষতা আর দূরদর্শিতার কারণে অল্পদিনেই সংগঠনটি মূলধারার মানবাধিকার ও সামাজিক সংগঠনে পরিণত হয়।

মিয়ানমার সরকারের কাছেও ফাতেমা মংডু এক বিস্ময়কর নাম। কঠিন- কঠোর অভিযান ও নির্যাতনের মধ্যেও একজন মুসলিম মেয়ে কিভাবে পুরো মিয়ানমারে বিপুল জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন, তা রীতিমতো গবেষণার বিষয়। তবে বরাবরই তিনি গণমাধ্যমকে এড়িয়ে গেছেন। ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের অসংখ্য সভা, সেমিনার, বৈঠক এবং সরকারের সঙ্গে দেনদরবারের খবরাখবর গণমাধ্যমে এলেও তার ছবি কেউই প্রকাশ করতে পারেনি। জানা যায়, সব ধরনের কর্মসূচির অন্তরালে থাকেন ফাতেমা মংডু। আর তার প্রতিনিধি হয়ে অন্যরাই এগুলোতে নেতৃত্ব দেন। অনেকের কাছে ফাতেমা মংডু ফ্যান্টাসির মতো। জীবন্ত কিংবদন্তিও বলেন কেউ কেউ। একটা নামকে ঘিরেই অনেক মানুষের ঐক্যবদ্ধতা। এই নামটার মধ্যেই কি যেন এক অব্যক্ত মোহনীয়তা আছে, যা চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে যায় মানবিক মানুষকে তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে।

রোহিঙ্গাদের পক্ষে এরকম সর্বজনীন একটা সংগঠন দাঁড়াবে এটা ২০১৭ সালেও ছিলো অসম্ভব, অকল্পনীয় ব্যাপার। কিন্তু ২০৩৪ সালে এটা বাস্তবতা।

ফাতেমা মংডুর বয়স কতই বা হবে, ২৭ বা ২৮। তার ব্যাপারে তথ্যের একমাত্র উৎস, বিবিসির সাংবাদিক ক্রিশিয়ান আরিজিনোর বই 'হোপ অ্যান্ড ফাইট'। বইটি ফাতেমা মংডুর জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে লেখা।

২০১৭ সাল। রাখাইন রাজ্যের মংডু অঞ্চল। মিয়ানমার আর্মির ভয়ঙ্কর অভিযানের সময় ফাতেমা তার বাবা, মা, দুই ভাইয়ের সাথে মংডুতেই ছিলেন। যেদিন অভিযান শুরু হয়, তার পরের দিন ভোরে তাদের পালিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো ইয়াঙ্গুনে। ইয়াঙ্গুনে তার মামার পরিবার থাকেন। কিন্তু ভোর হবার আগেই আক্রমণ হয় গ্রামে। বর্বর সেনারা ফাতেমাদের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুড়ে মারা যান তার বাবা, মা ও দুই ভাই। পাশের বাড়িতে তার ফুফুর কাছে রাতযাপন করায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় ফাতেমা।

ওই রাতেই গ্রাম ত্যাগ করে সে। এরপর তিন দিন দুই রাত সাপ বিচ্ছুর সঙ্গে লড়াই করে মংডুর জঙ্গলে রাতযাপন করে। সেখান থেকে অন্যত্র যাবার পথে সেনাদের হাতে আটক হয় ফাতেমা। এরপর টানা এক সপ্তাহ গ্যাংর‍্যাপের শিকার। মহাথেরে গাগই নামের এক সেনা সদস্যের সহানুভূতি হলে সেখান থেকে পালিয়ে রক্ষা পায় সে। সোজা চলে আসে ইয়াঙ্গুনে।

সেখান আসার পর শুরু হয় অন্যরকম লড়াই, যা কল্পনাকেও হার মানায়।

চিন্তার বুদবুদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচার্স ক্লাব। সোডিয়াম বাতির আলোর কারণে এখনো সন্ধ্যার কালো রঙ ছুঁয়ে দিতে পারেনি চারপাশ। ঠিক ৬টায় এখানে আসার কথা আবরারের। কিন্তু এখন সাড়ে ৬টা। আবরারের বন্ধু ড. সুভাস রায়। আরাকানের রোহিঙ্গাদের নিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি তার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। আজকের এ আড্ডায় উপস্থিত থাকার কথা প্রফেসর ড. সাদেকের। তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের পণ্ডিতও বলা যায় তাঁকে সিঁড়িতে পা রাখতেই আবরারের সঙ্গে দেখা সুভাসের।

আবরার, তোর ৩০ মিনিট লেট।

-আরে বলিস না, ঢাকা শহরের যে যানজট। মেট্রোরেলে এসেও যথাসময়ে পৌঁছতে পারলাম না।

তো কি খবর বল। স্যাররা কি এসেছেন।

সাদেক স্যার গেটে, চল নিয়ে আসি।

চল।

এই ধরনের আড্ডাকে ড. সুভাসরা নাম দিয়েছেন স্টাডি সার্কেল বা পাঠচক্র। এসব আড্ডা আসলে একধরনের আলাপচারিতা এবং ভোজন পর্ব। এর মধ্য দিয়ে কোন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলা। প্রতি আড্ডাতেই একজন সিনিয়র শিক্ষককে তারা আমন্ত্রণ করেন। দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ব্যপ্তি হয় এইসব পাঠচক্রের।

বাংলাদেশে আশির দশকটাই ছিলো আড্ডাবাজির। শোনা যায়, আড্ডা থেকেই স্বৈরাচার পতনের রূপরেখা তৈরি হয়েছে সে সময়। পুরনো ঢাকার বিউটি বোর্ডিংয়ে নিয়মিত আড্ডা দিতেন আহসান হাবিব, সিকান্দার আবু জাফর, শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদেরা। সেইসব আড্ডা এখন ইতিহাসে ঠাঁই নিয়েছে।

ক্লাব ক্যান্টিনের এক কোনায় বসেছে আজকের আড্ডা। সূত্রধর আবরার। তাকে ঘিরে অধ্যাপক সাদেক, ড. সুভাস এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ড. লতিফ খান। প্রথমে মুখ খোলেন সাদেক স্যার।

অধ্যাপক ড. সাদেক দ্যাখো, ২০১৭ সালের আগ্রাসনের পর মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলেও, এই সংকটের কোন ইতিবাচক সমাধান হয়নি। সেই সময় থেকে ইস্যুটাকে জোরালোভাবে অ্যাড্রেস করেছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ২০১৮ সালে ২ লাখ রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার পর এ বিষয়ে আর কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। এখন আশ্রয় নেয়া ৬ লাখ রোহিঙ্গার দায়ভার জগদ্দল পাথরের মতো চেপে আছে বাংলাদেশের ওপর।

আবরার: দুই লাখ রোহিঙ্গা ফেরত গেছে, এটার জন্য কি যুক্তরাষ্ট্র ক্রেডিট পাবে না?

ড. সাদেক: পাবে। কিন্তু শুরুতে তারা যতটা সিরিয়াস ছিলো, এখন সেটা নেই। কারণ রোহিঙ্গা ইস্যুকে ঘিরে তাদের সিরিয়াসনেসটা নির্ভর করে বিশ্বরাজনীতির ওপর। মিয়ানমারের পক্ষে চীন এবং রাশিয়ার যে জোরদার ভূমিকা, এই অবস্থানকে ঘিরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় একচ্ছত্র আধিপত্যের অধিকারী হয়ে ওঠে দুটি রাষ্ট্র। সুতরাং এর প্রভাব কমাতেই যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের পক্ষে একটা শক্ত স্ট্যান্ড নেয়। কিন্তু এখন তো চীনের সঙ্গে অতীতের সব সময়ের চেয়ে ভালো সম্পর্ক মার্কিনিদের। রাখাইনে যে হাজার কোটি ডলারের ব্যবসা বাণিজ্য গড়ে তুলেছে চায়না, সেখানে দুই একটি জায়গায় অংশীদারিত্বও পাচ্ছে অ্যামেরিকা। সুতরাং ২০১৭ আর ২০৩৪ যে এক নয়, তা স্পষ্ট করেই বোঝা যায়।

ড. সুভাস: এখন আসলে ৬ লাখ রোহিঙ্গার দায়ভার এইভাবে আমরা কতকাল বহন করবো। সুভাসের কথা কেড়ে নেয় ড. লতিফ খান।

ড. লতিফ: এখানে আসলে বাংলাদেশের কিছু স্ট্র্যাটেজিক ভুল আছে বলে মনে হয়। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার যেভাবে বর্ডার খুলে দিয়েছিলো, সেটা যথাযথ হয়নি বলে এখন তো অনেকেই মনে করছে।

ড. সাদেক: বর্ডার খুলে দেয়ার পেছনে অন্য যা কিছু থাকুক, মানবিকতার একটা বিষয় তো ছিলই। তবে, হ্যাঁ মিয়ানমারের প্রতি আমাদের যে ন্যূনতম সামরিক থ্রেট থাকার দরকার ছিলো সে সময়, তার বিন্দু পরিমাণও ছিলো না। এটা একটা বড় ভুল বলা যেতে পারে।

আবরার: স্যার, সে সময় সামরিক হুমকি দিলে পরিস্থিতি তো আরো খারাপ হতে পারতো। যুদ্ধ বেধে গেলে মিয়ানমারের সঙ্গে যদি চীন বা রাশিয়া যুক্ত হয়ে যেতো, তাহলে পরিস্থিতি তো ভয়ঙ্কর হতো।

ড. সুভাস: হ্যাঁ, এটা একটা ভালো পয়েন্ট।

ড. সাদেক: মানে আমি বলছি দুটোর ব্যালান্সের কথা। সামরিক এবং কূটনৈতিক তৎপরতা দুটোই চালিয়ে ওই সময়েই এটার দ্রুত সমাধান করা যেতো। আর সম্পূর্ণ বর্ডার খুলে দেয়াও শেষতক নেতিবাচক হয়েছে। কয়েকটা কাজ করা যেতো:

ক. মিয়ানমারকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া, তোমরা রোহিঙ্গাদের ফেরত না নিলে আমরা তাদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠাবো।

খ. কয়েকবার ওদের বিমান আকাশসীমা লঙ্ঘনের পর, শুধু নিন্দা নয়, কক্সবাজারে আমাদেরও সেনাক্যাম্প বাড়িয়ে একটা পরোক্ষ থ্রেট দেয়া যেতে পারতো।

গ. আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়ে রাখাইন নিয়ে সুদূরপ্রসারী একটি পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন ছিলো।

যাই হোক, এইসব পুরনো আলাপ করে কোনো লাভ নেই। নতুন কি খবর আছে আবরার।

আবরার: স্যার, আবিদার কথা আমি আপনাকে বলেছিলাম। ওই যে, তুরস্কে গিয়ে যার সঙ্গে সাক্ষাৎ। ওর কাছ থেকে অনেক তথ্য পেলাম। ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট তো খুব ভালো ভূমিকা পালন করছে।

ড. লতিফ: হ্যাঁ, গত ১০ বছরে রোহিঙ্গাদের পক্ষে ওই ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট প্রতিষ্ঠাই সবচেয়ে বড় কাজ বলে বিবেচিত হচ্ছে। তারা তো রোহিঙ্গা ইস্যুটাকে গোটা মিয়ানমারের ইস্যুতে পরিণত করেছে।

ড. সাদেক: হ্যাঁ, ঠিক বলেছো। বিশেষ করে, তাদের নেত্রী ফাতেমা মংডুর যে বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব তা সত্যি অসাধারণ। এথনিক ক্লিনজিং বা সর্বব্যাপী গণহত্যার পর কোন জাতি গোষ্ঠীর পুনরায় ঘুরে দাঁড়াবার যে প্রক্রিয়া তা যে বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃ ক্লিনজিং বা সর্বব্যাপী গণহত্যার পর কোন জাতি গোষ্ঠীর পুনরায় ঘুরে দাঁড়াবার যে প্রক্রিয়া তা বিরল ঘটনা। এটা ফাতেমার গভীর দূরদৃষ্টির কারণেই সম্ভব হয়েছে।

ড. সুভাস: ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট গত সপ্তাহে ৬ দফা দিয়েছে। সেই ৬ দফার ৫ নম্বরে রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে অবাক বিষয়, মিয়ানমারের অনেক গণতন্ত্রকামী বৌদ্ধরাও এখন চাইছে রাখাইন ইস্যুটার সমাধান হোক।

আবরার: এই ৬ দফার পক্ষে এ মাসের ১৫ তারিখে তারা ইয়াঙ্গুনে শান্তি পূর্ণ মানববন্ধন নামে একটা কর্মসূচি দিয়েছে।

ড. সাদেক: হ্যাঁ, ওই দিন আসলে কি হতে পারে, এটা একটা দেখার বিষয়। বিশ্ব মিডিয়াও ওই কর্মসূচি নিয়ে নিশ্চয়ই বেশ কৌতূহলী।

ড. সুভাস: জঙ্গী সংগঠন আরসার কারণে রোহিঙ্গাদের যে ইমেজ সঙ্কট হয়েছিলো, তার বিপরীতে ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের মাধ্যমে তাদের অবস্থান ও সম্মান গোটা বিশ্বেই নতুন করে জানান দিচ্ছে।

আবরার: একটা বিষয় লক্ষণীয় যে, প্রথমে ডেমক্রেটিক মুভমেন্ট সংগঠনটি ছিলো মানবাধিকার রক্ষার প্লাটফর্ম। কিন্তু ধীরে ধীরে এটি পরিণত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের অধিকার রক্ষার মঞ্চে।

ড. সাদেক: এটাই কৌশল। দূরদর্শী কৌশল। বঙ্গবন্ধু যদি ১৯৭১ এর ৭ মার্চে সরাসরি যুদ্ধের ঘোষণা দিতেন তাহলে যথার্থ হতো না। তিনি ওই ভাষণে কৌশলী কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। নইলে আমাদের মুক্তি সংগ্রাম বা বিজয় অর্জন আরো বিলম্বিত হতো।

ড. সুভাস: স্যার, আমার মনে হয়, রোহিঙ্গাদের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দরকার। মানে রাখাইন রাজ্যের স্বাধীনতা দরকার। নইলে স্থায়ীভাবে কখনোই এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে হয় না। সাময়িক কিছু একটা হতে পারে। কিন্তু কোরামিন দিয়ে মৃত মানুষকে আর কতক্ষণ জিইয়ে রাখা যায়! রোগ সারাতে দরকার কুইনাইন। তারা যেহেতু মিয়ানমারের মধ্যে বৈচিত্র্যময় জাতিগোষ্ঠী এবং যুগ যুগ ধরে নিপীড়িত। সুতরাং স্বাধীনতা চাইতেই পারে। তাছাড়া একসময় তো আরাকান স্বাধীন রাষ্ট্রই ছিলো। যদিও এখন আরাকানের সেই কনসেপ্ট অচল। কারণ সেই সময়ে আরাকানে আমাদের চট্টগ্রামও যুক্ত ছিলো।

ড. সুভাসের কথা কেড়ে নিয়ে আবরার বেশ উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বলে ওঠে : রোহিঙ্গা সংকট পুরোপুরি মিয়ানমারের। এটা তাদের নিজস্ব বিষয়। কিন্তু অহেতুক ও অযাচিতভাবে এই ইস্যু আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যেহেতু দায় চেপেছেই সুতরাং এখন বাংলাদেশের উচিত আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সামরিক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করা। এরপর, তাদেরকে রাখাইন রাজ্যে পাঠিয়ে তাদের স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করা উচিত।

ড. সাদেক বেশ চুপচাপ। শান্ত। ধীর স্থির। তিনি কি যেন ভাবছেন! ড. লতিফ খানিকটা রাগত স্বরে বললেন আবরার সাহেব, তাতে বাংলাদেশের লাভ কী। এ কাজ করলে বরং ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার একটা ফাঁদ তৈরি হবে।

আবরারের কণ্ঠেও ক্ষুব্ধতা!

: হ্যাঁ বাংলাদেশের অবশ্যই লাভ আছে। প্রথমত: এটা হবে সবচেয়ে বড় মানবিক কাজ, দ্বিতীয়ত: রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দেয়ার শক্ত প্রতিশোধ, তৃতীয়ত: বাংলাদেশের অধিকতর সামর্থ্য থাকলে রাখাইন রাজ্যটি দখল করারও একটি ভিত তৈরি হবে।

ড. সাদেক: আবরারের শেষ বক্তব্যটি খুবই স্পর্শকাতর। ২০১৬ সালে আমি অ্যামেরিকায় আর্মিদের এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেটা ছিলো মার্কিন বাংলা আর্মি ফ্রন্টের অনুষ্ঠান। এক মার্কিন জেনারেল আমার সঙ্গে কফি খেতে খেতে এ ধরনের একটা কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "ভাষা বাংলা, বাঙালিদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের শারীরিক কাঠামোগত মিল, অতীতের মুসলমানি আরাকানি রাজত্বের নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসের আলোকে তোমরা রাখাইন রাজ্যটিকে তোমাদের বলে দাবি করতেই পারো।"

কথাগুলো শুনে আমি অবাক হয়েছিলাম। আলাপচারিতায় বুঝতে পারলাম তিনি দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ে একজন প্রাজ্ঞ ব্যক্তি।

ড. লতিফ: কিন্তু বিশ্বব্যবস্থার এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এইসব চিন্তা কতটুকু যৌক্তিক?

ড. সাদেক এবার খানিকটা সজোরে হাসলেন।

: লতিফ সাহেব, আমরা তো কেবল আলোচনা করছি। এই বক্তব্য কতটা গ্রহণযোগ্য সেটা নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করছি না।

আবরার: স্যার, আমি যদি রাষ্ট্রপ্রধান হতাম, তাহলে অবশ্যই ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টকে সকল প্রকার সামরিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে তাদের স্বাধিকার বা স্বাধীনতা, যাই বলি না কেন, তা অর্জনে সহায়তা করতাম। সেক্ষেত্রে একটা শর্ত অবশ্যই সামনে থাকতো, সেটা হলো রাখাইনের স্বাধীনতা অর্জিত হওয়ার পর ভূখণ্ডটিকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার শর্ত।

ড. সুভাস: এরকম শর্ত কি তারা মানবে?

আবরার: কেন মানবে না। যাদের এখন কোন অস্তিত্বই নেই, তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবো, আর তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হবে না! এতে তো তাদের লাভই হবে। যদি সিকিমকে করায়ত্ত করতে পারে ভারত, তাহলে আমরা কেন রাখাইনকে আমাদের নিজেদের করতে পারবো না!

আবরারের শেষ কথায় আজকের আড্ডাটা ঝিম মেরে গেলো। সবাই নিশ্চুপ। হয়ত আবরারের ভাবনাটাই সবার মস্তিষ্কে গিয়ে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিচ্ছে।

আবিদার ইলেকট্রনিক চিঠি

ক'দিন ধরে ঝুম ব্যস্ততা আবরারকে ভিমরুলের মতো ঘিরে ধরেছে। সঙ্গীত, লেখালেখি এবং মানবাধিকার সংগঠন নিয়েই মূলত তার ব্যস্ততা। শাহবাগ থেকে টিএসসি, পল্টন থেকে বেইলি রোড; বলা যায় দৌড়ের উপর আছে সে। অবশ্য উইঢিবির মতো জমে থাকা নিজের কাজগুলো শেষ না করা পর্যন্ত অন্য কোন কিছুতে মনও দিতে চাচ্ছে না আবরার।

তবে মাঝে মাঝেই আবিদা জেরিনের চিন্তা উকিঝুঁকি দিচ্ছে মনের মধ্যখানে। গ্রামে মাচানের ফাঁক গলিয়ে যেভাবে উঁকি দেয় পুঁই লতা, সে রকম আরকি!

কেমন আছে আবিদা জেরিন। তার্কি সফরের পর আর কোন যোগাযোগ নেই কেন। কেমন চলছে ওদের মুভমেন্ট। এইসব এলেবেলে ভাবনা।

একটা হুডখোলা রিক্সায় টিএসসি ক্রস করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর হয়ে পুরনো ঢাকায় যাচ্ছে সে। রোদের ঝাঁঝে তেতিয়ে উঠেছে রিক্সার পিঠ। হঠাৎ টুং শব্দে মোবাইল ফোনে ইমেইল আসার আওয়াজে সম্বিত ফিরে পায় আবরার। একটা পিডিএফ ফাইল। আবিদা জেরিন এট দ্যা রেইট অফ জিমেইল থেকে এসেছে। আহ্, অদ্ভুত একটা প্রশান্তি। হৃদকম্পন জোরে বাড়ছে। আবরারের মনে হচ্ছে মেঘের উপরে পালকিতে করে উড়ে যাচ্ছে। অনেক খরার পরে বৃষ্টি নামার অনুভূতি।

কি লিখেছে আবিদা। কাঁপা কাঁপা হাতেই জিমেইলটা ওপেন করে আবরার।

মিস্টার আবরার,

প্রিয়, কেমন আছেন। ক'দিন ধরে আপনার কথা খুব মনে পড়ছে। যৌক্তিক কারণেই বাংলাদেশের মানুষকে আমরা অন্তর থেকে ভালোবাসি। ১৯৭১ এর পর থেকে আপনারা যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তার প্রতিদান দেয়া অসম্ভবই বটে। সত্যিকারভাবেই আপনারা আমাদের হৃদয়জুড়ে রয়েছেন।

বিশেষভাবে আপনার প্রতি আমি মুগ্ধ। এই স্নিগ্ধতার সৌরভ আমি তুরস্কে বসেই পেয়েছি। আপনি নিশ্চয়ই জানেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের পক্ষে মানববন্ধন করতে গিয়ে ১০০ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সেনবাহিনীকে জাতিসংঘ তাদের সকল কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ এবং সাহায্য-সহযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করেছে। এগুলো সবই আপনাদের জানা। ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট ইতোমধ্যে ৬ দফা ঘোষণা করেছে। ৬ দফার পক্ষে এবং শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে ১৫ মার্চ মিয়ানমারের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছি। অবশ্যই সেটা শান্তিপূর্ণভাবে।

সেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে এখন নির্ঘুম প্রস্তুতি চলছে। জান্তা সরকারের গোয়েন্দা জাল ভেদ করে মুভমেন্টের কাজ করা খুবই কঠিন। এরপরও আমাদের কর্মীদের বুদ্ধিমত্তা এবং সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যের কারণে আমরা এগুতে পারছি। সর্বোপরি আমাদের আন্দোলনটা এখন আর রোহিঙ্গাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। মিরাকল ব্যাপার হলো, রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের সংগ্রাম এখন গোটা মিয়ানমারের মানবাধিকার রক্ষার একটি প্রতীকে পরিণত হয়েছে। ফলে এই প্ল্যাটফর্মে শুধু মুসলমান শ্রেণী নয়, যুক্ত হচ্ছে বৌদ্ধ- খ্রিস্টান থেকে শুরু করে অন্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।

এই যে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানো, এর পেছনে ১৭ বছরের অসহনীয় শ্রম, দুর্ভোগ, কৌশল এবং বুদ্ধিমত্তা রয়েছে। আমি এক সাধারণ রোহিঙ্গা তরুণী, আমাকেও ১০টি ভাষায় পারদর্শী হতে হয়েছে! সেইসব লড়াইয়ের একেকটা বাঁকের কথা পাড়লে একেকটা দীর্ঘ উপন্যাস হয়ে যাবে, নিশ্চিত।

যাই হোক, আপনি আমার প্রিয় বন্ধু বলেই কথাগুলো বলছি। একটা অলিখিত দাবি থেকেই বলছি। আজ খুব করে আপনার কাছে একটি বিষয়ে সহযোগিতা চাইবো। ১৫ তারিখের কর্মসূচিকে সামনে রেখে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দফতর থেকে আমাদের ন্যায্য আন্দোলনের পক্ষে জোরালো একটি বিবৃতি চাই। সেটা যদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেন, তাহলে খুবই ভালো হয়। বিষয়টি নিয়ে ভাববেন আশা করছি।

আবার কবে দেখা হবে জানি না। সুযোগ থাকলে একবার ইয়াঙ্গুনে আসুন। ভুলে যাবেন না আমাকে। আপনার নাম আমার হৃদয়ে পরম মমতায় ঝুলিয়ে রেখেছি।

ইতি

আবিদা জেরিন

ইয়াঙ্গুন

মিয়ানমার।

ইলেকট্রনিক চিঠিটা পড়তে পড়তে কখন যে আবরার রিক্সায় পুরনো ঢাকায় পৌছে গেছে, তা টের পায়নি সে। দারুণ মুডে এখন আবরার। মনের মধ্যে একটা প্রত্যয়-আবিদাদের জন্য কিছু একটা করতেই হবে।

রিক্সা ছেড়ে দিয়ে একটা চায়ের দোকানে ঢুকে আবরার। বুকের ভেতর এখনো ইমেইল পড়ার উত্তেজনা। দোকানের এক কোনায় বসে পাল্টা চিঠি লিখতে শুরু করে।


প্রিয় আবিদা,

প্রত্যাশা করছি ভালো আছেন।

আপনার কোন খবর পাচ্ছি না, এ নিয়ে একটা উদ্বেগ ছিলো। মেইল পেয়ে যেনো এক গুচ্ছ গোলাপ হাতে পেলাম।

১৫ তারিখের দিকে আমরাও তাকিয়ে আছি। আশা করছি, জান্তা সরকারের কোন ধরনের উৎপাত ছাড়াই কর্মসূচি শেষ হবে। মানবাধিকার ও স্বায়ত্তশাসনের ৬ দফা সফল হবেই।

আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি। একজন মানবাধিকার ও সংস্কৃতিকর্মী হিসেবে আমি আপনাদের ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের সহযোগিতায় সর্বাত্মকভাবে সক্রিয় থাকবো। এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। বিশেষ কথা হলো, আপনি যে সহযোগিতা চেয়েছেন, সে বিষয়ে আজই আমি আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আমার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কও আছে। সুতরাং পজেটিভ কিছু হবে বলেই মনে হয়। শুধু এটাই নয়, আরো যা যা সহযোগিতা প্রয়োজন জানাবেন। প্রশাসনের সামরিক বেসামরিক উচ্চস্তরে আমার যোগাযোগ আছে। রোহিঙ্গাদের জন্য বা ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের জন্য যদি কিছু করতে পারি, তাহলে সেটা আমার কাছে পরম প্রাপ্তি মনে হবে।

আমি জানি, আপনাদের সংগঠন পুরোপুরি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করছে। কিন্তু কোন এক সময় সামরিক সহায়তাও দরকার হতে পারে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে জানাবেন। হয়ত আমাকে দিয়েও হতে পারে কোন ঐতিহাসিক কাজের খসড়া। মিয়ানমারের ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটা সেতু করে দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা আমার থাকবে।

শুধু স্বায়ত্তশাসন নয়, আপনাদের স্বাধীনতা অর্জন ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। কথাটা আমি বলে রাখলাম, একদিন এর সত্যাসত্য উপলব্ধি করবেন।

তবে, সবিনয়ে একটা দাবির কথা জানিয়ে রাখতে চাই। আমার স্বপ্ন, মিয়ানমারের রাখাইন একদিন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হবে। আমরা ফিরে পাবো আমাদের হারানো এক সময়ের আরাকানকে। জানি না সেই স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে কী না! তবে আপনাদের প্রতি আমাদের সমর্থনের মধ্য দিয়ে সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের একটা ধাপে পা রাখতে পারি।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নানা দিক দিয়েই বাংলাদেশের মানুষের মিল। আমি মনে করি, রাখাইন আমাদেরই ভূখণ্ড। এটা ঐতিহাসিকভাবে জোরপূর্বক দখলে রেখেছে মিয়ানমার। ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিক ইতিহাস পাঠ করে দেখুন। শুনে রাখুন আবিদা, আপনারা যেমন রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের জন্য প্রাণপণ লড়াই করছেন, ঠিক তেমনি এখানেও অনেক যুবক আছেন, যারা রাখাইনকে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত করতে জীবন দিতে প্রস্তুত।

আবিদা জেরিন, আমি আপনাকে ভালোবাসি। মন থেকে বলছি, আই লাভ ইউ। কিন্তু সেই প্রেমের চেয়ে কি দেশপ্রেম বড় নয়? সুতরাং আমি একজন দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি হিসেবে আমার ইচ্ছেগুলো আপনার সামনে উপস্থাপন করলাম। প্লিজ আপনি অন্যভাবে নেবেন না।

ভালো থাকবেন আবিদা। আপনার নামটিও আমার হৃদয়ে ঝুলিয়ে রেখেছি। 

খোদা হাফেজ।


খুব দ্রুত অ্যানড্রয়েডে মেইলটা লিখে সেন্ড করে, একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো। খুব হালকা লাগছে তার। আবিদা জেরিনকে সব কথা খুলে বলতে পেরেছে আবরার।

একদিকে ব্যক্তিগত প্রেম, অন্যদিকে দেশপ্রেম, দুটোর কথাই জানলো আবিদা।

আহ্ শব্দ করে একটা তৃপ্তির উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আবরার।

পর্ব-৩ এখানে....... 





1 comment:

Powered by Blogger.
Chat with us on WhatsApp